চন্দনাইশে শীতের শুরুতে সবজি চাষে ব্যস্ত কৃষক। শীতের আগেই বাজারে শীতকালীন সবজি সরবরাহের লক্ষ্যে চন্দনাইশের কৃষকদের মধ্যে সবজি চাষের ধুম পড়েছে। আগাম শাকসবজির বাজার দর বেশি হওয়ায় এখন চারা তৈরি ও জমি পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন উপজেলার দোহাজারী শঙ্খ তীরবর্তী এলাকার কৃষকরা।
চন্দনাইশ উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ৮টি ইউনিয়ন ও ২টি পৌর সভায় ১ হাজার ২’শ হেক্টর জমিতে সবজি চাষ হয়। ইতিমধ্যে ৫’শ হেক্টর জমিতে শীতকালীন সবজি চাষ শেষ হয়েছে। বাকী জমিগুলোতে শীতকালীন সবজির চাষাবাদ পুরোদমে শুরু হয়েছে। শীতকালীন সবজির মধ্যে চন্দনাইশের শঙ্খ নদীর তীরবর্তী এলাকাসহ বরকল, বরমা, হাশিমপুর, কাঞ্চননগর এলাকায় শীতকালীন সবজি বেগুন, মুলা, টমেটো, শিম, বরবটি, শসা, লাউ, কুমড়া, ফুলকপি, বাঁধাকপিসহ বিভিন্ন জাতের সবজি চাষে কৃষকরা ব্যস্ত সময় পার করছে। প্রায় ১২’শ হেক্টর জমিতে শীতকালীন সবজি উৎপাদনের লক্ষমাত্রা নিয়ে কৃষকরা মাঠে নেমেছেন। সম্প্রতি সময়ে ভয়াবহ বন্যার কারণে সবজি ক্ষেতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। কৃষকরা সে ক্ষতি পুঁষিয়ে ভালো লাভের আশায় শীতের আগাম চাষে ঝুঁকে পড়েছেন চাষিরা। আগাম সবজির মধ্যে রয়েছে মুলা, বেগুন, শিম, ফুলকপি, বাঁধাকপি, লালশাক, করলা, টমেটো, পালংশাক, পুঁইশাক ইত্যাদি। চন্দনাইশ শঙ্খনদীর উভয় পাড়ে চারা তৈরি থেকে শুরু করে আগাম শাকসবজি রোপনে ব্যস্ত চাষিরা। দোহাজারী জামিজুরী গ্রামের কৃষক জামাল উদ্দীন বলেছেন, যে কোনো সবজি যদি মৌসুমের শুরুতে বাজারে যায়, তবে তার দাম বেশি পাওয়া যায়। ইতোমধ্যে মুলা, লালশাক, করলা, পালংশাক বাজারে আসতে শুরু করেছে। কৃষকরা পর্যাপ্ত দামও পাচ্ছেন। চন্দনাইশের পাহাড়ি এলাকা ধোপাছড়ি, পূর্ব সৈয়দাবাদ, দোহাজারী লালুটিয়ায়, হাশিমপুরের প্রায় ১০ হাজার কৃষক পরিবার বিভিন্ন জাতের সবজি চাষ করে থাকে। এতে ভালো ফলনও হয়। স্থানীয়ভাবে চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে যাচ্ছে চন্দনাইশের সবজি। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আজাদ হোসেন বলেছেন, সম্প্রতি পাহাড়ি ঢলে বন্যার কারণে চন্দনাইশের সবজি চাষে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। গত ১৬ অক্টোবর থেকে শীতকালীন সবজির মৌসূম শুরু হয়েছে। তবে কৃষকরা ইতিমধ্যে লক্ষ্যমাত্রার অর্ধেকাংশ তথা ৬’শ হেক্টর জমিতে সবজি চাষ করেছে। ১ হাজার ২’শ হেক্টর লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে কৃষকরা কাজ করে যাচ্ছে। বর্তমানে সবজি উৎপাদনে ঘাটতি থাকায় ক্রেতাদের বেশি দামে সবজি ক্রয় করতে হচ্ছে। চন্দনাইশ শঙ্খ নদীর তীরবর্তী এলাকা সবজি চাষের জন্য উপযোগী হওয়ায় এখানকার সবজির উৎপাদন ভালো হয় এবং খেতেও সুস্বাদু। বিদায় চন্দনাইশে সবজির চাহিদা সারা চট্টগ্রামে। এ সকল সবজি রাখার জন্য দোহাজারী এলাকায় একটি সবজি হিমাগার স্থাপনের দাবী জানিয়েছেন কৃষকরা। চন্দনাইশ রেলওয়ে মাঠে প্রতিদিন সকালে সবজির বাজার বসে। সেখানে চন্দনাইশের বিভিন্ন এলাকাসহ পাশ্ববর্তী উপজেলা সাতকানিয়া বিভিন্ন ইউনিয়নের কৃষকরা সবজি এনে বিক্রি করে। প্রতিদিন এ বাজারে চট্টগ্রাম শহর এলাকাসহ বিভিন্ন এলাকার পাইকারী বিক্রেতারা সবজি ক্রয় করে ট্রাকে করে নিয়ে যায়।
