স্বরাজ ভট্টাচার্য (প্রতিনিধি)
সহমরণী মহাশ্মশান বাঁশখালী উপজেলাস্থ ৮ নং উত্তর জলদির শীবধাম মন্দির সংলগ্ন মহাশ্মশান।
এই জায়গায় নাম লক্ষণের চিতা নামে পরিচিত ছিল। এটি একটি ভয়ঙ্কর শ্মশান ছিল। রাতের কথা দূরে থাক! ভয়ঙ্কর এই শ্মশানের সংলগ্ন রাস্তা দিয়ে মানুষ দিনেও চলাফেরা করত না। অত্র এলাকার ব্রাহ্মণ পরিবারের গোলক চন্দ্র ভট্টাচার্য্য এর বাড়ী হতে সহমরণী গিয়েছিলেন। স্বামীর নাম অজ্ঞাত ও স্ত্রী নাম রুক্ষিনী ভট্টাচার্য। তিনি স্বইচ্ছায় সহমরণে গিয়েছিলেন। সেই থেকে ১৮৩০ সালে এই শ্মশানের নামকরণ হয় সহমরণী মহাশ্মশান তখনও এই শ্মশানের আশপাশ দিয়ে নিদ্বিধায় চলাফেরা করার সাহস করত না। মুষ্টিমেয় গ্রামবাসীর উদ্যেগে ২০০৫ ইং সালে এই শ্মশানের সংস্কার শুরু হয়। পরে ২০০৭ ইং সনের ডিসেম্বর হতে এই সহমরণী মহাশ্মশান এর পুনঃ সংস্করণ শুরু হয় যা এখনো পর্যন্ত চলমান।
২৫শে বৈশাখ ১৪১৫ বাংলা ৮ই মে ২০০৮ ইং বৃহস্পতিবার চর্তুদশী তিথিতে ভগবান শিবের “বান লিঙ্গ” নামে বর্তমান শিবলিঙ্গ শিবধামে প্রতিষ্ঠা করা হয়। ভগবান শিবের দৃশ্যমান মূর্তি দর্শনার্থে দূর-দুরান্ত থেকে জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে দৈনিক ভক্তসমাগম ঘটে। ভগবান আশুতোষের আর্শীবাদের জন্য ভক্তরা অনেক কিছু মানত করেন। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মঠ, মন্দির, মিশন ইত্যাদি হতে সাধু ব্রহ্মচারী গণ ও ভগবান আশুতোষের কৃপালাভার্থে এখানে উপবিষ্ট হন।
এবং উপস্থিত ভক্তগনের ও গ্রামবাসীর উদ্দেশ্যে সনাতনী সমাজের গাঠনিক ও তাত্ত্বিক তথ্য আর্শীবাদ হিসেবে ব্যক্ত করেন। এই সংলগ্ন শিব, সংহার কারীই নয়, এক অনন্য বরদাতা। তার সন্তুষ্টিতে অপুত্রক পুত্র পায়, নিধনী পায় ধন। ত্রিভূবনে তাঁহার মত আছে আর কজন। সে-ই সর্বেসর্বা। সমস্ত গ্রহ যার বিপক্ষে থাকে আর সে যদি ভগবান শিবের ভজন বা আরাধনা করে ঐ মঙ্গলময়কে সন্তুষ্ট করতে পারে, তাকে ভগবান শিব-ই রক্ষা করেন তাতে কোন সন্দেহ নেই। সতী সাধ্বী নারীদের মধ্য ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্রাংশ হিসেবে জলদী, বাঁশখালী, চট্টগ্রাম তথা চট্টগ্রামসহ দক্ষিণ অঞ্চলের অহংকার ও গর্ব রুক্মিনী ভট্টাচার্য্য। যিনি ছিলেন মাখন লাল ভট্টাচার্য্য (সিনিয়র শিক্ষক, বাঁশখালী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়) এর বৃদ্ধা পিতামহী।
যেমন দক্ষযজ্ঞে সতী দেহত্যাগ করেছিলেন তখন ভগবান শিব এসেছিলেন তেমনি মানব তথা জগতের কল্যাণার্থে ভগবান শিব সহমরণী মহাশ্মশান শিবধামে স্থাপিত হয়েছেন। এই সহমরণী – মহাশ্মশানে প্রতিষ্ঠিত পরমকরুণাময় বানেশ্বরের “বানলিঙ্গ” এর দৈনিক ১২.০১ মিনিটের সময় পূজা ও রাত ৮.৩০ মিনিটের সময় শয়নারতি হয়।