আমাদের দিগন্ত প্রতিবেদক
দক্ষিণ চট্টগ্রামের আনোয়ারা -বাঁশখালী সীমান্তবর্তী শঙ্খ নদীর উপরে ৩২ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত তৈলারদ্বীপ সেতু স্থায়ী ভাবে টোলমুক্ত রাখার দাবিতে আজ ৩০ শে সেপ্টেম্বর রোজ সোমবার সওজ চট্টগ্রাম দক্ষিণ সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী পিন্টু চাকমা বরাবর স্মারক লিপি দিয়েছেন বাঁশখালীবাসী ও ছাত্রসমাজের পক্ষে মুহাম্মদ নিজাম উদ্দিন।
স্মারকলিপি সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম শহরের ৪৭ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত কৃষি ও প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর একটি অনিন্দ্য সুন্দর ও সম্ভাবনাময় উপজেলা বাশঁখালী । পূর্বে পাহাড়, পশ্চিমে বঙ্গোপসাগরের জলরাশি, দক্ষিণে কক্সবাজার জেলা, উত্তরে বান্দরবান জেলায় উৎপত্তি বয়েচলা সাঙ্গু নদী। প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর বাঁশখালীর কৃষি পণ্য চট্টগ্রাম শহরে সুনামে আজো ঠিকে আছে। প্রতিদিন বাঁশখালী থেকে কৃষকের উৎপাদিত সবজি/মাছ / লবন সারা দেশে সরবরাহ হয়। বাঁশখালীর ৮৫% মানুষ প্রত্যেক্য পরোক্ষভাবে কৃষির সাথে সম্পৃক্ত। প্রাকৃতিক সম্পদ ও শিক্ষা-দিক্ষায় অপর সম্ভাবনাময় এ উপজেলার দুঃখ “তৈলারদ্বীপ সেতুর টোল”। চট্টগ্রাম শহরের সাথে একমাত্র যোগাযোগ ব্যবস্থা আনোয়ারা হয়ে সাঙ্গু নদী পেরিয়ে বাঁশখালী। ফেরী/নৌকার উপর ভর করে দীর্ঘদিন বাঁশখালীর মানুষ পাড়ি দিত সাঙ্গু নদী। বাঁশখালীর মানুষের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন সাঙ্গুর উপর ব্রীজ। তৎকালীন সরকার বাঁশখালীর কৃষক/শ্রমিক/ ছাত্র জনতার দূর্ভোগ অনুধাবন করে বাঁশখালীর মানুষের সে স্বপ্ন বাস্তবে রূপ দিতে ৩২,০০,০০,০০০/- (বত্রিশ কোটি) টাকা ব্যয়ে দেশীয় অর্থায়নে সাঙ্গুর উপর নির্মাণ করে ৫১২ মিটার দীর্ঘ তৈলারদ্বীপ সেতু। ২০০৬ সালেল ২৯ আগষ্ট উদ্ভোধন হয় তৈলারদ্বীপ সেতু। দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর বাঁশখালীর মানুষের স্বপ্ন বাস্তবায়ন হলেও আশায় ছাঁই ছিটায় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রাণালয়। কৃষক/শ্রমিক দরিদ্র জনগোষ্টী বাঁশখালীবাসীর গাড়ে উঠে টোল নামক কড়ক। শুরু থেকে জনমনে সৃষ্টি হয় অসন্ত্রোষ। বাঁশখালীর উৎপাদিত সবজি/মাছ/লবণে বাড়তি খরচ যোগ হয়। বেশ কয়েকবার টোল বন্ধের আশ্বাস দেয় কর্তৃপক্ষ। মিছিল/ মিটিং/ সভা/ সমাবেশ শুরু করে বাঁশখালীর কৃষক/ শ্রমিক জনতা। ২০০৭-৮ সালের সেনা সমাতি তত্ত্বাবাধয়ক সরকার এবং পরবর্তীতে স্বৈরাচার সরকার জনগণের ভাষা অনুধাবন করার চেষ্টা করেননি। চালু থাকে অযৌক্তিক/অন্যায় বৈষাম্যর টোল। গত ৫ই আগষ্ট ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানে স্বৈরাচার সরকার পতন হলে টোল কর্তৃপক্ষ পলায়ন করে। জনগণ দখলে নেয় টোল আদায়ের স্থান। দীর্ঘ দিনের ক্ষোভে ভষ্মিভূত হয় টোল আদায়ের সর্বশেষ চিহ্নটিও। স্বস্তি ফিরে বাঁশখালীর কৃষক/শ্রমিক জনতার মনে । সাঙ্গু নদীর উৎপত্তি স্থল বান্দরবান। আঁকাবাকা পথে বাঁশখালী ও আনোয়ারা উপজেলার সীমান্ত বেয়ে নদীটি পতিত হয় বঙ্গোপসাগরে। এ নদীর উপর ছোট বড় অনেক সেতু নির্মিত হয় কালক্রমে। এমনকি ঢাকা-কক্সবাজার সড়কেও সাঙ্গুর উপর নির্মিত হয় ব্রীজ। সাঙ্গুর উপর নির্মিত কোন সেতুর টোল আদায়ের নজীর ইতিহাসে নাই। দরিদ্র জনগোষ্ঠি কৃষি নির্ভর বাঁশখালীর সাথে দীর্ঘ দিনের অন্যায়/অবিচার ও বৈষম্যমূলক আচারণ সাঙ্গুর উপর নির্মিত তৈলারদ্বীপ সেতুর টোল আদায়। স্বৈরাচার পতনের পর টোল কর্তৃপক্ষের পলায়ন/টোল আদায়ের স্থান জনগণের দখল ইত্যাদি আমরা মনে করি দীর্ঘদিনের বাঁশখালীবাসীর স্বপ্ন বাস্তবায়ন ও আন্দোলনের ফসল।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সিনিয়র সদস্য মোঃ নিজাম উদ্দিন বলেন, বাঁশখালী ও পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন উপজেলার সর্বসাধারণের দীর্ঘদিনের প্রাণের দাবি তৈলারদ্বীপ সেতুর টোলমুক্ত করা। কিন্তু আওয়ামী স্বৈরাচার সরকারের আমলে তাদের দলীয় নেতাকর্মীরা একচেটিয়া প্রভাব খাটিয়ে এসেতুতে টোল বাণিজ্য করে আসছিল। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র -জনতার আন্দোলনে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী সরকার পদত্যাগের পর এই সেতু টোলমুক্ত ঘোষণা করছে শত শত ছাত্র-জনতা। আমি ইতিমধ্যে বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে স্মারকলিপি প্রদান করেছি আমি আশাবাদী অতি শীঘ্রই আনোয়ারা বাঁশখালী শঙ্খ নদীর উপর নির্মিত সেতুর টোল মুক্ত হবে। স্মারক লিপি প্রধানকালে উপস্থিত ছিলেন, মো: অলিউল হোসেন রুবেল যুগ্ম আহবায়ক, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ছাত্রদল, মো: মহিউদ্দিন সাগর সদস্য চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ছাত্রদল,সাবেক ছাত্রনেতা মো: ফয়সাল উদ্দিন, মোহাম্মদ এনাম, মাহমুদুল হাসান,আবরার মাহমুদ,সাজ্জাদ হোসেন,মেসবাহ উদ্দিন, মো: ফরহাদ ইমন, মিনহাজুর রহমান আবিদ,আরফাতুল ইসলাম, বাঁশখালী শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মো: কামাল উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক নজির আহমদ, নূর হোসেন, জানে আলম মো: তৌহিদুল ইসলাম, সাদ্দাম হোসেন, মোঃ সেলিম প্রমুখ।