মোঃ বাকি বিল্লাহ চৌধুরী(লেখক)
৬ মে — একটি দিন, যা এদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে এক নতুন মোড়ের আভাস দিচ্ছে। দীর্ঘ চিকিৎসা শেষে বিএনপির চেয়ারপারসন ও তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া অবশেষে বাংলাদেশে ফিরছেন। কিন্তু এই ফিরে আসা শুধু একটি যাত্রা নয় — এটি একটি সময়ের ঘোষণা, একটি জনতার উত্তাল অপেক্ষার প্রতিফলন।
বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হলো, কাতারের আমিরের পক্ষ থেকে প্রেরিত একটি বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করেই খালেদা জিয়া লন্ডন ত্যাগ করবেন। অত্যাধুনিক চিকিৎসা সরঞ্জামসমৃদ্ধ সেই বিমানে তাঁকে সার্বক্ষণিক তত্ত্বাবধানে রাখা হবে। ধারণা করা হচ্ছে, পরদিন অর্থাৎ ৬ মে বাংলাদেশে এসে পৌঁছাবেন তিনি। এই সম্মানসূচক ব্যবস্থা কেবল তাঁর ব্যক্তিগত গুরুত্ব নয়, বরং আন্তর্জাতিক পর্যায়েও তাঁর অবস্থানের প্রতিচ্ছবি।
এমন একটি যাত্রাকে কেন্দ্র করে বিএনপির কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যন্ত নেতাকর্মীদের মধ্যে বিরাজ করছে এক অদ্ভুত রকমের উৎসবমুখর আবেগ। ব্যানার, ফেস্টুন, মিছিল, মাইক — সব যেন অপেক্ষা করছে একটি নামের জন্য — খালেদা জিয়া।
বিগত বছরগুলোতে যিনি রাজনীতি থেকে কার্যত বিচ্ছিন্ন ছিলেন নানা শারীরিক জটিলতা ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে, আজ তাঁর প্রত্যাবর্তন একটি নতুন প্রত্যয়ের ইঙ্গিত দিচ্ছে। বিরোধী রাজনীতির নিষ্পেষণ, গৃহবন্দিত্ব আর আদালতের চক্করে ঘেরা জীবনের পর, আজ আবার বাংলার বুকে ফিরছেন ‘দেশমাতা’ খ্যাত এই নেত্রী।
একজন লেখক হিসেবে আমি দেখছি, তাঁর এই প্রত্যাবর্তন কেবল রাজনীতির মাঠে পদচারণা নয়, এটি একটি জনগোষ্ঠীর আশা, অধিকার ও ভবিষ্যতের প্রতি আস্থার পুনর্জন্ম। তাঁর ফেরা মানে ফিরে আসা এক প্রেরণার, এক সংগ্রামের, এক বিশ্বাসের।
বিশ্লেষকরা বলছেন, খালেদা জিয়ার ফিরে আসা বর্তমান অচলাবস্থার রাজনীতিতে নতুন গতি আনতে পারে। একদিকে সরকারের চাপ, অন্যদিকে জনগণের আস্থা — এই দ্বন্দ্বের মাঝেও তাঁর নেতৃত্বে ফিরতে পারে ভারসাম্য, ফিরতে পারে রাজনৈতিক স্বাভাবিকতা।
এখন সময় এসেছে তাঁকে স্বাগত জানানোর, দলমত নির্বিশেষে সেই নেতৃত্বকে মূল্যায়ন করার, যিনি জীবন উৎসর্গ করেছেন এই দেশের জন্য।
অভিনন্দন দেশমাতা। বাংলার বুক তোমায় ফিরে পেয়ে গর্বিত। ৬ মে আমরা শুধুই অপেক্ষা করবো না — আমরা হবো ইতিহাসের অংশ।