কলাম : অন্নি শীল, আহ্বায়ক, হিন্দু ছাত্র জাগরণ মঞ্চ কেন্দ্রীয় কমিটি
মহাভারতের ইতিহাসে দ্রৌপদীর বস্ত্রহরণ ছিল এক নিষ্ঠুর কলঙ্ক—যে কলঙ্ক সেদিন কুরুবংশকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিয়েছিল। কিন্তু আজও, এই কলঙ্ক থেমে নেই। আজও ঘরে, পথে, মন্দিরে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নারীরা ধর্ষিত হচ্ছে, লাঞ্ছিত হচ্ছে। দ্রৌপদীর আত্মচিৎকার এখনো বাতাসে ভেসে বেড়ায়। প্রশ্ন জাগে—আমরা কি আবার ধর্মযুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে?
যেখানে আইন নীরব, রাষ্ট্র ব্যর্থ, সমাজ নির্বিকার—সেখানে প্রতিবাদই ধর্ম। এখন আর চোখ ফিরিয়ে বাঁচা যায় না। প্রতিটি ধর্ষণের খবরে কেবল চোখ ভিজে ওঠা যথেষ্ট নয়, দরকার প্রতিরোধ গড়ে তোলা।
আমরা, হিন্দু ছাত্র জাগরণ মঞ্চ, বলছি—সময় এসেছে নতুন ধর্মযুদ্ধের। সময় এসেছে রুখে দাঁড়াবার।
নারী হোক কালী, দুর্গা—দেবীর রূপ ধারণ করো।
পুরুষ হোন অর্জুন—হাতে নাও সাহস, সত্য আর প্রতিবাদের ধনুক।
শুরু হোক অন্যায়ের বিরুদ্ধে যুদ্ধ। শুরু হোক সম্মানের জন্য সংগ্রাম।
ধর্ম কখনো হিংসা চায় না, কিন্তু ধর্ম মানেই অন্যায়ের বিরুদ্ধে মাথা তুলে দাঁড়ানো।
“ধর্ম এভ হন্তি হন্তি” — ধর্ম বিনাশ করে সেই পাপীকে যে ধর্মকে নষ্ট করে।
“ধর্ম রক্ষতি রক্ষিতঃ” — যে ধর্মকে রক্ষা করে, ধর্মও তাকে রক্ষা করে।
আমরা চাই না আর কোনো মা তার মেয়ের লাশ চিনে নিতে ফেসবুকে ছবি ঘুরিয়ে বেড়াক।
আমরা চাই না আর কোনো নারী ধর্ষণের পরে বিচার চাইতে গিয়ে বিচারহীনতার শিকার হোক।
তাই বলছি—
এই যুদ্ধ ন্যায়বিচারের জন্য
এই যুদ্ধ আত্মমর্যাদার জন্য
এই যুদ্ধ আগামী প্রজন্মের জন্য
হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান—ধর্ম যাই হোক, ধর্ষণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করাই এখন সর্বোচ্চ ধর্ম।
আমরা সবাই যুদ্ধ করব—কলম দিয়ে, কণ্ঠ দিয়ে, কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে।