চট্টগ্রামের পিটিআই অডিটরিয়ামে আয়োজিত জেলা কর্মশালায় ধর্ম বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেছেন, ধর্ম নিয়ে কটুক্তি করা কিংবা দাঙ্গা-হাঙ্গামা সৃষ্টি করা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এক ব্যক্তির অপরাধে তার স্বজনদের বাড়ি-ঘরে হামলা চালানো বা সাম্প্রদায়িকভাবে দোষ চাপানো সব ধর্মেই নিষিদ্ধ এবং আইনগতভাবে দণ্ডনীয় অপরাধ। এই ঘৃণ্য কাজ আমাদের দীর্ঘদিনের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করে ও মানুষে মানুষে বিভাজন তৈরি করে।
হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট চট্টগ্রাম কর্তৃক আয়োজিত এবং জেলা প্রশাসন, চট্টগ্রামের সহায়তায় অনুষ্ঠিত এ কর্মশালার শিরোনাম ছিল— “টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট অর্জন এবং নৈতিক শিক্ষার প্রসারে মন্দিরভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম এর ভূমিকা”। প্রধান অতিথির বক্তৃতায় ড. খালিদ হোসেন আরও বলেন, “বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সৌহার্দ্য আশেপাশের অনেক দেশের তুলনায় উত্তম। এখানে আমরা মিলেমিশে সব ধর্মের উৎসব করি। সম্প্রতি জন্মাষ্টমীও আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে উদযাপন করেছি, ঢাকার কেন্দ্রীয় অনুষ্ঠানের পাশাপাশি আঞ্চলিক পর্যায়েও সনাতনী ভাইদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় হয়েছে। বাংলাদেশ আজ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির রোল মডেল।”
অনুষ্ঠানে বক্তারা বেশ কিছু দাবি উত্থাপন করেন— যেমন বেহাত হওয়া দেবোত্তর সম্পত্তি উদ্ধার, সীতাকুণ্ড চন্দ্রনাথ মন্দিরে নতুন সিঁড়ি নির্মাণ, প্রকল্পের শিক্ষকদের সম্মানী বৃদ্ধি এবং কর্মরত জনবলকে রাজস্ব খাতে স্থানান্তর। এসব বিষয়ে উপদেষ্টা জানান, দেবোত্তর সম্পত্তি যদি বেহাত হয় তবে আইন অনুযায়ী উদ্ধার করা হবে, তবে মামলা থাকলে তা সহজে সম্ভব হয় না। চন্দ্রনাথ মন্দিরে সিঁড়ি নির্মাণের ব্যাপারে মন্দির কমিটির সঙ্গে আলোচনা করে উদ্যোগ নেওয়া হবে। প্রকল্প রাজস্বখাতে স্থানান্তর বিষয়ে তিনি বলেন, মসজিদভিত্তিক কিংবা মন্দির-ভিত্তিক এসব প্রকল্প বহু বছর ধরে চলছে— কারো ৮ম পর্যায়, কারো ৬ষ্ঠ পর্যায়। নিয়োগের সময়ই চাকরির শর্তাবলি স্পষ্ট থাকে, তাই সে মোতাবেক প্রকল্প চলবে। তবে চলমান প্রকল্প যেন বন্ধ না হয় সে জন্য অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনা করা হবে।
শিক্ষকদের সম্মানী প্রসঙ্গে তিনি জানান, মসজিদভিত্তিক প্রকল্পের শিক্ষকদের সম্মানী সম্প্রতি ৬ হাজার টাকা করা হয়েছে। একইভাবে আগামী বাজেটে মন্দিরভিত্তিক প্রকল্পের শিক্ষকদেরও সমহারে সম্মানী দেওয়ার ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মোঃ শরীফ উদ্দিন। এসময় উপস্থিত ছিলেন প্রকল্প পরিচালক ও ধর্ম মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব ড. শ্রীকান্ত কুমার চন্দ, হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি দীপক কুমার পালিত, পরিমল কান্তি শীল, এডভোকেট পার্থ পাল চৌধুরী, বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি অধ্যাপক ববি বড়ুয়া, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বিভাগীয় পরিচালক সরকার সারোয়ার আলমসহ অনেকে।