ধ*র্ষণের বিরুদ্ধে যু*দ্ধ:নিরাপত্তার নতুন দিগন্ত উন্মোচন হোক”

লেখক :অভি পাল

আজকাল আমাদের সমাজের সবচেয়ে জঘন্য অভিশাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে ধর্ষণ। প্রতিদিন কোথাও না কোথাও ঘটে নারী, শিশুর প্রতি অমানবিক অত্যাচার—বাচ্চা থেকে শুরু করে গর্ভবতী মহিলাও এই বর্বরতার শিকার। একদিকে এই অপরাধের শিকার হচ্ছে আমাদের অমূল্য মা-বোনেরা, অন্যদিকে সমাজের আত্মবিশ্বাস, নৈতিক মূল্যবোধ এবং মানবিকতার স্তম্ভ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

ধর্ষণ কেবল শারীরিক নির্যাতন নয়, এটি একজন নারীর মন ও আত্মাকে নিঃশেষ করে দেয়। নির্যাতিতার জীবন পরিণত হয় এক বেদনার্ত যন্ত্রণায়, যার ক্ষত কখনো মুছে যায় না। প্রতিটি ধর্ষিতার কান্না, তার অন্তর্দ্বন্দ্ব, তার নিঃশব্দ আর্তনাদ যেন প্রতিধ্বনিত হয় আমাদের সমাজে। তবুও, আমরা চুপ করে বসে আছি—এটিই কি সঠিক উত্তর?

তবে আমাদের নিরবতা আরো চলতে পারে না। অপরাধী যদি জানে, যে তার অপরাধের ফলাফল আসবে না, সে যদি বুঝতে পারে যে শাস্তি তাকে সময়ের মধ্যে পৌঁছাবে না, তবে সে আরও বেপরোয়া হয়ে উঠবে। এ অবস্থা কোনোভাবেই চলতে দেওয়া যায় না। প্রশাসন, বিচার ব্যবস্থা এবং আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে এখনই এক কঠোর, তৎপর এবং জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। ধর্ষকদের শাস্তি যেন দ্রুত, দৃষ্টান্তমূলক ও চরম হয়, যাতে সমাজে অপরাধের বিরুদ্ধে এক শক্তিশালী বার্তা পৌঁছায়।

এছাড়া, শুধু আইন-শৃঙ্খলার প্রয়োগ নয়, সামাজিক সচেতনতার অগ্নিপরীক্ষা দরকার। আমাদের প্রতিটি সন্তান, প্রতিটি মেয়ে, প্রতিটি মা, প্রতিটি বোন—এদের নিরাপত্তা আমাদের অগ্রাধিকার হতে হবে। আজকে, একে একে সমাজের প্রত্যেকটি স্তরকে জাগ্রত করতে হবে। নারী-পুরুষের সমঅধিকার, নারীর প্রতি শ্রদ্ধা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা—এটাই আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। সমাজের প্রত্যেকটি পরিবার, সংগঠন এবং ব্যক্তি যদি এ ব্যাপারে নিজ নিজ ভূমিকা পালন করে, তবে পরিস্থিতির পরিবর্তন সম্ভব।

ধর্ষণ আর মানবাধিকার নয়—এটি এক ভয়াবহ অপরাধ। আজকের সময়েই, রাষ্ট্র, সমাজ ও মানুষের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমাদের মা-বোনেরা এই ভয়াবহ দানবিক অত্যাচার থেকে রক্ষা পেতে পারে। আমাদের একসাথে দাঁড়াতে হবে, আমাদের একে অপরের পাশে থাকতে হবে, আমাদের প্রতিবাদে একাত্ম হতে হবে।

এটাই সময়, আজই সময়—যাতে ভবিষ্যতে আর কোনো মা, বোন, বা মেয়ে এই পৃথিবীতে নিরাপত্তাহীনতায় জীবন কাটাতে না হয়। আমরা চাই, আমাদের সমাজে নারী-শিশুর প্রতি শ্রদ্ধা, নিরাপত্তা, এবং সম্মান প্রতিষ্ঠিত হোক।