অভি পাল:-চট্টগ্রামের আকাশে উড়ল রঙের ঢেউ, ঢাকের তালে জেগে উঠল শহর—জেলা প্রশাসনের আয়োজনে পহেলা বৈশাখ ১৪৩২ উদযাপন যেন হয়ে উঠল প্রাণের উৎসব, আনন্দের আগুনে দগদগে এক সকাল। শিল্পকলা একাডেমির প্রাঙ্গণে সকাল ৮টা থেকে শুরু হওয়া অনুষ্ঠানে মুখর ছিল লোকজ সুর, বর্ণিল সাজসজ্জা আর হাজারো মানুষের পদচারণা।
জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে সূচনা হয় দিনের, এরপর “এসো হে বৈশাখ” গানের তালে নতুন বছরকে বরণ করে নেওয়া হয়। সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম। প্রাণবন্ত সঞ্চালনায় ছিলেন চান্দগাঁও সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. ইউসুফ হাসান। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিভাগীয় কমিশনার ড. মো. জিয়াউদ্দীন। বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি (ক্রাইম ম্যানেজমেন্ট) ওয়াহিদুল হক চৌধুরী ও সিএমপি’র উপকমিশনার নেছার উদ্দিন আহমেদ।
শোভাযাত্রার উদ্বোধন করেন প্রধান অতিথি নিজ হাতে, আর সেই সঙ্গে চারপাশে ছড়িয়ে পড়ে উৎসবের ঝলক। শিশু একাডেমিতে অনুষ্ঠিত চিত্রাঙ্কন ও রচনা প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন অতিথিরা। অনুষ্ঠানজুড়ে ছিল করতালির ঝঙ্কার, রঙিন হাসি, আর লোকসংগীতের মধুর ধ্বনি।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিভাগীয় কমিশনার ড. জিয়াউদ্দীন বলেন, “নববর্ষ মানেই এক নতুন সূচনা, এক নতুন সম্ভাবনা। সংস্কৃতির এই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে হবে নতুন প্রজন্মের মাঝে। নববর্ষ হোক ভালোবাসার, সম্প্রীতির, ও নতুন স্বপ্নের প্রতীক।”
জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম তাঁর বক্তব্যে বলেন,“পহেলা বৈশাখ এমন একটি উৎসব, যেখানে জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাই মিলেমিশে আনন্দ ভাগ করে নেয়। এটি আমাদের অসাম্প্রদায়িক চেতনার এক অনন্য নিদর্শন। পুরনো বছরের সব গ্লানি, হিংসা আর বিভেদ ভুলে আমরা সবাই যেন হাতে হাত ধরে এগিয়ে যাই একটি বৈষম্যহীন, সহনশীল, উন্নত সমাজ গঠনে—এই হোক নতুন বছরের অঙ্গীকার।”
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন জেলা আনসার-ভিডিপি কমান্ডার মো. আবু সোলায়মান ও জেলা মহিলা বিষয়ক উপ-পরিচালক আতিয়া চৌধুরী।
সবশেষে চট্টগ্রাম জেলা শিশু একাডেমি ও জেলা শিল্পকলা একাডেমির শিক্ষার্থীদের পরিবেশনায় মঞ্চে আসে বর্ণিল দলীয় সংগীত ও নৃত্য। দর্শকদের করতালিতে মুখর হয় প্রাঙ্গণ, আর উৎসবের ঢেউ ছড়িয়ে পড়ে সারা শহরে।