অভি পাল: চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার প্রাচীন ও আধ্যাত্মিক তীর্থস্থান শ্রীশ্রী চণ্ডীতীর্থ মেধস মুনি আশ্রম যেন গত ৫ই জুনের সকালে আরও পবিত্র হয়ে উঠেছিল। সদ্যপ্রয়াত শ্রীমৎ স্বামী বুলবুলানন্দ গিরি মহারাজের সমাধিতে ফুল, ভালোবাসা আর নীরব অশ্রুজলে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করেন বাংলাদেশ সনাতন পার্টি (বিএসপি) চট্টগ্রাম জেলা কমিটির নেতৃবৃন্দ।
এই আয়োজনে আশ্রমের আকাশবাতাসে যেন ভেসে বেড়াচ্ছিল মহারাজের অদৃশ্য আশীর্বাদ। এমন পবিত্র মুহূর্তে উপস্থিত ছিলেন বিএসপি কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আশীষ কুমার দাশ। তিনি গভীর শ্রদ্ধা ও আবেগভরা কণ্ঠে বলেন, “বুলবুলানন্দ গিরি মহারাজ ছিলেন এক জীবন্ত দর্শন। তিনি ছিলেন সেই আলোকবর্তিকা, যাঁর আলোয় সনাতন সমাজ নতুন পথ খুঁজে পেয়েছে। তাঁর নীরব ত্যাগ আর পরিশুদ্ধ আচার আমাদের সংগঠনের রক্তধারায় প্রবাহিত হয়ে আছে। আজ আমরা তাঁর চরণে কেবল ফুল নয়, নিবেদন করছি আমাদের আদর্শ, আমাদের অঙ্গীকার।”
শ্রদ্ধাঞ্জলির সময় আশ্রমে উপস্থিত ছিলেন চণ্ডীতীর্থ মেধস মুনি আশ্রমের সভাপতি অধ্যাপক স্বদেশ চক্রবর্তীও। তিনি বলেন, “মহারাজের চলে যাওয়া কেবল আশ্রমের নয়, সারা দেশের জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি। এই আশ্রম যেন আজও তাঁর নিঃশ্বাস ধারণ করে আছে। তাঁর আদর্শকে এগিয়ে নিতে আমরা সকলে একত্র হয়েছি, এটাই তাঁর প্রতি প্রকৃত শ্রদ্ধা।”
চট্টগ্রাম জেলা কমিটির সভাপতি নারায়ণ মজুমদার বলেন, “মহারাজ ছিলেন আমাদের আধ্যাত্মিক অভিভাবক। তাঁর আশীর্বাদই আমাদের সাংগঠনিক শক্তির মূল উৎস। তিনি ছিলেন নীরব আলো, আর আমরা সেই আলোয় পথ চলতে শিখেছি। আজকের শ্রদ্ধাঞ্জলি কোনো আনুষ্ঠানিকতা নয়, বরং এটি আমাদের অন্তর থেকে উৎসারিত ভালোবাসা ও প্রতিজ্ঞা—তাঁর দেখানো পথে আমরা থাকব অবিচল।”
এই আয়োজনে আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা কমিটির সিনিয়র সভাপতি রূপক দেবনাথ, সহ-সভাপতি গৌরাঙ্গ দে, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সঞ্জয় চক্রবর্তী, সহ-সাধারণ সম্পাদক গোপাল তালুকদার, সাংবাদিক মিলন বৈদ্য শুভ, সুজিত চৌধুরী, রবিন মজুমদার, রুবেল ভট্টাচার্যসহ জেলার বিভিন্ন থানা ও উপজেলার সিনিয়র সদস্য ও নেতৃবৃন্দ।
সমগ্র আয়োজনে অনুভব করা গেছে এক অনন্য স্নিগ্ধতা। বুলবুলানন্দ গিরি মহারাজের সমাধির পাশে দাঁড়িয়ে নেতৃবৃন্দ যেন নিজেরাই ফিরে যাচ্ছিলেন তাঁর সান্নিধ্যের দিনগুলিতে। সেই নীরবতা, সেই ত্যাগ আর ভালোবাসা আজও তাঁদের পথ দেখায়।