
বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকার যদি সহায়তা চায় তাহলে সেনাবাহিনী সেভাবে কাজ করবে বলে জানিয়েছেন, মিলিটারি অপারেশনস ডাইরেক্টরেটের কর্নেল স্টাফ কর্নেল মো. শফিকুল ইসলাম।
সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা সেনানিবাসের বনানী অফিসার্স মেসে সেনাসদর আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সেনা কর্মকর্তা বলেন, রাজধানীসহ সারা দেশে কিছু হটস্পট বা নির্দিষ্ট স্থান চিহ্নিত করে সেগুলোকে নজরদারিতে রাখা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সেনাবাহিনীর তৎপরতায় দেশে মব জাস্টিস, চাঁদাবাজি ও হত্যা আগের চেয়ে অনেক কমে এসেছে। ভবিষ্যতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আরও স্বাভাবিক হবে।
সেনা সদস্যের বিরুদ্ধে ডাকাতির অভিযোগে তদন্ত চলমান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সংশ্লিষ্টদের বিচারের মুখোমুখি করা হবে। জনগণের আস্থার জায়গায় সবসময় সেনাবাহিনীকে আপনারা পাবেন।’
বান্দরবানে ২২ জন রাবার শ্রমিক অপহরণের বিষয়ে তিনি আরও বলেন, ‘কোনও একটি গ্রুপ তাদের অপহরণ করেছে। তাদের উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। এছাড়াও কুকি চিনের দৌরাত্ম্য কমে এসেছে। তাদের অনেকগুলো ক্যাম্প ধ্বংস করা হয়েছে।’
এর আগে লিখিত বক্তব্যে কর্নেল মো. শফিকুল ইসলাম জানান, বিগত ৫১ দিনে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী ১৭২টি অবৈধ অস্ত্র এবং ৫২৭ রাউন্ড গোলাবারুদ উদ্ধার করেছে। এ সময়ে দেশের বিভিন্ন শিল্পাঞ্চলে ৮৮টি অস্থিতিশীল পরিস্থিতি মোকাবিলা করা হয়। এ ধরনের পরিস্থিতি থেকে উদ্ভূত সড়ক অবরোধ নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী সক্রিয় ভূমিকা রাখে।
এছাড়া কারখানাগুলোকে চালু রাখার জন্য মালিক, শ্রমিক, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, শিল্পাঞ্চল পুলিশ, বিজিএমইএসহ সংশ্লিষ্ট সবার সমন্বয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হয়। বর্তমানে দেশের ২ হাজার ৯৭টি গার্মেন্টসের মধ্যে গুটি কয়েক ছাড়া সব কারখানাই চালু রয়েছে।
শিল্পাঞ্চল ছাড়াও সেনাবাহিনীর সদস্যরা বিগত এক মাসে ৪২টি বিভিন্ন ধরনের বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে বলে জানিয়েছেন কর্নেল শফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘এরমধ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সংক্রান্ত ঘটনা ছিল ১৪টি, সরকারী সংস্থা, অফিস সংক্রান্ত তিনটি, রাজনৈতিক কোন্দল ৯টি এবং বিভিন্ন ধরনের ঘটনা ছিল ১৬টি।’
তিনি বলেন, বিগত এক মাসে বিভিন্ন ধরনের অপরাধের সঙ্গে সম্পৃক্ত ২ হাজার ১৪২ জনকে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এসব কাজের পাশাপাশি সেনাবাহিনী দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখা, বিদেশি কূটনৈতিক ব্যক্তি ও দূতাবাসগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখা এবং কক্সবাজারে এফডিএমএন ক্যাম্প এলাকার নিরাপত্তা বিধানের দায়িত্বও সার্বক্ষণিকভাবে পালন করে যাচ্ছে।
কর্নেল শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘বিরাজমান পরিস্থিতিতে সেনাবাহিনী দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা, জনগণের জানমাল এবং রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ ও স্থাপনার নিরাপত্তা দেওয়াসহ সার্বিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। সেনাপ্রধানের দিকনির্দেশনা অনুসরণ করে দেশের ৬২টি জেলায় সেনাসদস্যরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, স্থানীয় প্রশাসন, বিভিন্ন সংস্থা, গণমাধ্যম ও সাধারণ জনগণের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে সক্রিয়ভাবে দায়িত্ব পালন করছে।’