“আকাশে বো*মা, মাটিতে কান্না-গা*জা এক মৃত্যু*পুরী”-উ*ত্তাল দীঘিনালা

দুর্জয় বড়ুয়া (প্রতিনিধি) 

ঘুমন্ত শিশুর উপর বোমা পড়ছে, পিতার সামনে ছিন্নভিন্ন হয়ে যাচ্ছে তার আদরের সন্তান, বিধবা মা বুকে ধ্বংসস্তুপ চাপা দিয়ে ডেকে ফিরছে তার মৃত স্বামীকে—এ যেন মৃত্যু, কান্না আর নৃশংসতার এক অবিরাম উপাখ্যান। ফিলিস্তিনের গাজায় দিনের পর দিন যে ভয়াবহ গণহত্যা চলছে, তা আধুনিক সভ্যতাকে ধিক্কার জানাচ্ছে। স্কুল, হাসপাতাল, মসজিদ—কিছুই রেহাই পাচ্ছে না ইসরায়েলি আগ্রাসনের থাবা থেকে। প্রতিটি মুহূর্তে সেখানে ঝরছে রক্ত, বিলীন হচ্ছে মানুষ, নষ্ট হচ্ছে প্রজন্ম। অথচ বিশ্ব বিবেক নীরব। এই নির্লজ্জ নীরবতার প্রতিবাদে খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় আর্তনাদে গর্জে উঠল তৌহিদী জনতা। তারা প্রমাণ করে দিল—গাজা একা নয়, দীঘিনালার প্রতিটি হৃদয়ে গাজার ব্যথা ধ্বনিত হয়।

আজ সোমবার দীঘিনালার বোয়ালখালী বাজার মসজিদ থেকে শুরু হয়ে কলেজ গেট পর্যন্ত এক বিশাল বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। দীঘিনালার প্রতিটি মসজিদ থেকে ইমাম সাহেবদের নেতৃত্বে মুসল্লিরা রাস্তায় নেমে আসেন। মিছিলটি এক পর্যায়ে জনসমুদ্রে রূপ নেয়। “ফিলিস্তিন তুমি একা নও”, “ইসরায়েলি পণ্য বর্জন করো”, “গাজার রক্ত বৃথা যেতে দেবে না”—এই সব স্লোগানে দীঘিনালার আকাশ যেন প্রতিধ্বনিতে কেঁপে উঠেছিল।

বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে নেতৃত্ব দেন ছাত্রনেতা মোঃ জাহিদ এবং ইসলামী যুবনেতা মোঃ আশরাফুল। তারা বলেন, “আজ যারা গাজায় রক্ত ঝরাচ্ছে, তারাই কাল আমাদের দিকেও হাত বাড়াবে। সময় এসেছে, প্রতিরোধ গড়ার। আমাদের প্রতিবাদ হোক সাহসিকতার প্রতীক।”

সমাবেশের সভাপতিত্ব করেন দীঘিনালা কেন্দ্রীয় জামিয়া মসজিদের খতিব মাওলানা জামিল সাহেব। তিনি বলেন, “গাজা এখন আর কেবল একটি ভৌগোলিক এলাকা নয়—এটি মুসলিম উম্মাহর হৃদয়ের প্রতীক। ফিলিস্তিনের প্রতিটি শহীদ আমাদের ঈমানের সাক্ষী।”

সমাবেশে বক্তারা আরও বলেন, “ইসরায়েলি বাহিনীর এই বর্বরতা মানবতার বিরুদ্ধে জঘন্যতম অপরাধ। মুসলিম উম্মাহকে এখনই জেগে উঠতে হবে। আমাদের উচিত, সর্বত্র ইসরায়েলি পণ্য বর্জন করা, এবং গাজার জন্য দোয়া ও সাহায্য অব্যাহত রাখা।”

তাদের কণ্ঠে ক্ষোভ ছিল, ছিল যন্ত্রণার হাহাকার—আর ছিল প্রতিরোধের দৃপ্ত প্রত্যয়।