“নি’র্যাতন, অ’পমান, নি’পীড়নের বিরুদ্ধে—সনাতন সমাজের হুঁ’শিয়ারি চট্টগ্রাম থেকে”

অভি পাল:সারাদেশব্যাপী সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতন, লুটপাট, হত্যা, ধর্ষণ, অপহরণ, ঘরবাড়িতে হামলা, মন্দির ও দেবালয়ে ভাঙচুরসহ ধারাবাহিক সাম্প্রদায়িক সহিংসতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছে ‘চট্টগ্রাম সনাতনী নাগরিক সমাজ (CSCS)’।

শনিবার (১২ জুলাই) সকালে চট্টগ্রাম একাডেমিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সীতাকুণ্ড ভোলানন্দ গিরি আশ্রমের অধ্যক্ষ উমাসানন্দ গিরি মহারাজ। তিনি বলেন, “আজ বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের জীবন, সম্পত্তি, ধর্মীয় বিশ্বাস—কোনো কিছুই নিরাপদ নয়। মন্দিরে আগুন লাগছে, প্রতিমা ভাঙছে, শিশু ও নারীরা নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। এসব ঘটনার সঠিক বিচার না হওয়ায় অপরাধীরা দিনকে দিন বেপরোয়া হয়ে উঠছে। সর্বশেষ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানিত শিক্ষক অধ্যাপক ড. কুশল বরণ চক্রবর্তীর সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে, তা শুধু ব্যক্তি অপমান নয়—এটি গোটা শিক্ষাব্যবস্থাকে অস্থির ও বিভ্রান্ত করার এক হীন ষড়যন্ত্র। বিশ্ববিদ্যালয় যদি বিদ্বেষের জায়গায় পরিণত হয়, তবে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম কী শিখবে? আমরা আর নিরবে সব সহ্য করব না। রাষ্ট্র যদি দায়িত্ব পালন না করে, জনগণকে দাঁড়াতে হবে।”

তিনি আরও বলেন, “আমরা রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে নয়—আমরা ন্যায়ের পক্ষে, মানবাধিকারের পক্ষে, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের পক্ষে। এই আন্দোলন কোনো একক সম্প্রদায়ের নয়, এটি মানবতার পক্ষের প্রতিবাদ। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে বলতে চাই—যাদের হাতে প্রতিমা ভাঙে, ঘর পুড়ে, শিক্ষক লাঞ্ছিত হয়, তারা দেশপ্রেমিক নয়, তারা জাতির কলঙ্ক। এদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।”

সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন বাংলাদেশ সনাতন পাটির সাধারণ সম্পাদক, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সুমন কুমার রায়।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন পটিয়া শ্মশান কালি মন্দিরের অধ্যক্ষ পরিতোষানন্দ গিরি মহারাজ, সনাতনী অধিকার আন্দোলনের প্রশান্ত হালদার ও পলাশ সেন, বাংলাদেশ সনাতন পাটির কেন্দ্রীয় সভাপতি আশীষ দাশ, চট্টগ্রাম সনাতনী নাগরিক সমাজের সংগঠক পিংকু ভট্টাচার্য, সীতাকুণ্ড স্রাইন কমিটির সদস্য অশোক চক্রবর্তী, তরুণ হিন্দু সংগঠক তন্ময় মল্লিক এবং সুশান্ত অধিকারীসহ আরও অনেকে।

সংবাদ সম্মেলন শেষে অংশগ্রহণকারীরা কালো ব্যাজ ধারণ করে মৌন মিছিল করেন এবং চট্টগ্রামের চেরাগি মোড়ে শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেন।

বক্তারা সংখ্যালঘুদের ওপর অব্যাহত হামলা, ধর্মীয় সহিংসতা ও শিক্ষাঙ্গনে সৃষ্ট অরাজকতার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় পদক্ষেপ জোরদারের আহ্বান জানান এবং দোষীদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানান