দীঘিনালার ‘নিউজিল্যান্ড’: প্রকৃতির কোলে এক নতুন পথ

দুর্জয় বড়ুয়া  (প্রতিনিধি)  

খাগড়াছড়ির দীঘিনালা উপজেলার কবাখালী ইউনিয়নের তারা বনিয়া এলাকায় সম্প্রতি নির্মিত হয়েছে এক মনোমুগ্ধকর পাকা রাস্তা। তবে এটি শুধু পথচলার মাধ্যম নয়, হয়ে উঠেছে মানুষের বিকালের অবসর কাটানোর প্রিয় গন্তব্য। দুই পাশে সবুজ ধানের মাঠ, দিগন্ত বিস্তৃত ফসলের আকাশি ঢেউ আর পড়ন্ত বিকেলের সোনালি আভায় মোড়ানো এই রাস্তা যেন প্রকৃতির সঙ্গে এক আত্মিক বন্ধন সৃষ্টি করেছে।

আগে এই রাস্তা ছিল ইটের তৈরি, বর্ষায় কাদায় ভরা থাকত, আর গ্রীষ্মে ধুলোর ঝড় তুলত। কিন্তু গত বছর এটি পাকা করার পর পুরো এলাকার চিত্রই বদলে গেছে। একদিকে মানুষের চলাচলে সুবিধা হয়েছে, অন্যদিকে এটি পরিণত হয়েছে এক দর্শনীয় স্থানে। সৌন্দর্যের অনন্য বৈচিত্র্যের কারণে স্থানীয়রা   এর নাম দিয়েছেন ‘নিউজিল্যান্ড’।

বিকেল হলেই এখানে ভিড় জমতে থাকে। দূরদূরান্ত থেকে মানুষ আসে একটুখানি স্বস্তি নিতে, প্রকৃতির শোভা দেখতে। রাস্তার দু’পাশে এখন বসেছে নানা খাবারের দোকান—ফুচকা, চটপটি, চা কিংবা স্থানীয় পাহাড়ি খাবারের স্বাদ নিতে ভিড় করে পথচারীরা। পাহাড়ি ও বাঙালি উভয় সম্প্রদায়ের মানুষের মিলনমেলা যেন এখানে প্রতিদিন নতুন গল্পের জন্ম দেয়।

এই রাস্তা যেন শুধু যাতায়াতের মাধ্যম নয়, বরং এটি হয়ে উঠেছে এলাকার মানুষের প্রাণের স্পন্দন। বিকেলে যখন সূর্য পশ্চিমের আকাশে লাল-কমলা রঙ ছড়িয়ে দেয়, তখন এই রাস্তা থেকে সে দৃশ্য দেখার অনুভূতি সত্যিই অতুলনীয়। বাতাসে ভেসে আসে সবুজ ফসলের মিষ্টি ঘ্রাণ, গোধূলির আলোয় রাস্তার পিচ ঢালা পথ যেন রূপকথার এক স্বপ্নীল পথ হয়ে ওঠে।

দীঘিনালার ‘নিউজিল্যান্ড’ এখন আর শুধু একটি রাস্তা নয়, এটি প্রকৃতি ও মানুষের এক মিলনস্থল। এখানে দাঁড়িয়ে যে কেউ হারিয়ে যেতে পারে নিসর্গের সৌন্দর্যে, অনুভব করতে পারে এক অনাবিল প্রশান্তি। উন্নয়নের ছোঁয়ায় গড়ে ওঠা এই পথ একদিকে যেমন জীবনযাত্রা সহজ করেছে, তেমনি মানুষকে উপহার দিয়েছে একটি অসাধারণ সৌন্দর্যের ঠিকানা।