অভি পাল
এমন এক দৃশ্য চোখে পড়লে মনে হয়, যেন একটি পবিত্র স্থান আর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাশে একটি বিপর্যয় বাসা বেঁধে আছে। ফিরিঙ্গি বাজারের খ্রিস্টীয় উপাসনালয় ও মন্দিরের সন্নিকটে, যেখানে ভক্তরা তাদের আধ্যাত্মিক শান্তি খুঁজে পেতে আসেন, সেখানে রয়েছে একটি অস্বাস্থ্যকর ময়লা-আর্বজনার ডাস্টবিন। এই অবস্থা শুধু ভক্তদের প্রার্থনা ও শান্তির পথে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে না, বরং এটি শিক্ষার্থীদের শিখন পরিবেশকেও নষ্ট করছে, তাদের স্বাস্থ্য এবং ভবিষ্যতকে বিপদের সম্মুখীন করছে।
একদিকে, খ্রিস্টীয় উপাসনালয়ে আসা ভক্তরা স্নেহ, শান্তি, এবং আধ্যাত্মিক তৃপ্তি খোঁজার জন্য প্রার্থনা করতে আসেন। কিন্তু তাঁদের সামনে যদি থাকে ময়লা আর দুর্গন্ধের স্তুপ, তবে তারা কীভাবে নিজের মনোযোগে ফোকাস করবেন? এটাই এখন তাদের প্রশ্ন। প্রতিদিন যারা এখানে প্রার্থনা করতে আসেন, তারা জানেন না, তাদের পথের ওপর এমন বিপর্যয় অপেক্ষা করছে। এক দিকে পূজার আচার, অন্যদিকে ময়লা-আর্বজনার দুর্গন্ধ—এটি যেন পবিত্রতার প্রতি একটি অপমান। এমন পরিবেশে ধর্মীয় আচার-কর্ম পালন করা কিভাবে সম্ভব?
এদিকে, এয়াকুব আলী দোভাষ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন ময়লা-আর্বজনার স্তুপের মধ্যে পড়াশোনা করতে আসছেন। ছোট ছোট শিশুরা, যারা ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে, তাদের এই পরিবেশে পড়াশোনা করা কিভাবে সঠিক হতে পারে? একদিকে তাদের শিখন পরিবেশ দূষিত হচ্ছে, অন্যদিকে তাদের স্বাস্থ্যকে হুমকির মুখে ফেলা হচ্ছে। ময়লার দুর্গন্ধ শ্বাস প্রশ্বাসে ঢুকছে, যা তাদের দেহে প্রভাব ফেলছে। এই অবস্থা, তাদের ভবিষ্যতের জন্য এক বড়ো বিপদ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এলাকার বাসিন্দা, মন্দির কর্তৃপক্ষ এবং বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা এই পরিস্থিতি নিয়ে বহুবার কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানিয়েছেন, তবে আজও কোনো কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। এই দীর্ঘ অবহেলা, ভক্তদের শান্তি এবং শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যকে তো হুমকির মুখে ফেলছেই, পাশাপাশি এটি পুরো এলাকার জন্য বিপদ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এখন কর্তৃপক্ষের কাছে একটাই প্রশ্ন—যখন এই অঞ্চলের মানুষ, বিশেষত ভক্ত ও শিক্ষার্থীরা সমস্যার সম্মুখীন, তখন কেন এমন ভয়াবহ অবস্থা উপেক্ষা করা হচ্ছে? এটি আর সহ্য করা সম্ভব নয়—এখনই পদক্ষেপ নিতে হবে, এভাবে আর চলতে দেওয়া যায় না। ধর্মীয় স্থান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং জনগণের স্বাস্থ্যের কথা ভেবে, কর্তৃপক্ষকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে।
এলাকার বাসিন্দাদের একটাই দাবি—এলাকার পরিচ্ছন্নতা এবং সুরক্ষা এখন একান্তই কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব, আর এই অবস্থা অবিলম্বে পরিবর্তন করা উচিত।