“মনোনয়ন ঘিরে উ’ত্তপ্ত দক্ষিণ চট্টগ্রাম, বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীদের ল’ড়াই জমজমাট”

অভি পাল:ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে চট্টগ্রামের দক্ষিণাঞ্চলে জমে উঠেছে রাজনৈতিক উত্তাপ। বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীরা এখন আর কেবল ‘সম্ভাব্য’ নন—তারা যেন হয়ে উঠেছেন পুরো এলাকার আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু।

দলীয় মনোনয়ন ঘোষণার আগেই প্রার্থীরা মাঠে নেমে পড়েছেন সরব উপস্থিতি আর সংগঠনের শক্তি প্রদর্শনের প্রতিযোগিতায়। এলাকায় এলাকায় তাদের পদচারণা, উঠান বৈঠক, ধর্মীয় ও সামাজিক অনুষ্ঠান, দলীয় কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ—সব মিলিয়ে ভোটের মাঠ যেন গরম হয়ে উঠেছে আগেভাগেই।

বিশেষ করে চট্টগ্রাম দক্ষিণাঞ্চলের আসনগুলোতে বিএনপির একাধিক প্রার্থী নিজেদের অবস্থান জানান দিচ্ছেন প্রতিনিয়ত। কে হচ্ছেন বিএনপির চূড়ান্ত প্রার্থী—তা এখনো অনিশ্চিত, কিন্তু কে কতটা সক্রিয় আর জনপ্রিয়—তা নিয়ে চলছে হিসাব-নিকাশ, গুঞ্জন ও সমীকরণ।

দক্ষিণ চট্টগ্রামে বিএনপির সম্ভাব্য মনোনয়ন প্রত্যাশীরা:
চট্টগ্রাম- ৮ (চান্দগাঁও, বোয়ালখালী): এ আসনে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান, মহানগর বিএনপি আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহ এবং দক্ষিণ জেলা বিএনপি’র সাবেক সদস্য সচিব মোস্তাক আহমেদ খান।
 

চট্টগ্রাম-১২ (পটিয়া): এ আসনে দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ও পটিয়া উপজেলা বিএনপিরআহ্বায়ক এনামুল হক এনাম, বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক এমপি গাজী মো. শাহজাহান জুয়েল, দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ইদ্রিস মিয়া, বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাবেক সদস্য সৈয়দ সাদাত আহমেদ এবং চবি ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দীন সালাম মিঠু।
 
চট্টগ্রাম-১৩ (আনোয়ারা-কর্ণফুলী): এ আসনে দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্য সচিব লায়ন হেলাল উদ্দিন, কর্ণফুলী উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম মামুন মিয়া এবং দক্ষিণ জেলা বিএনপি সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আলহাজ আলী আব্বাস।
 
চট্টগ্রাম-১৪ (চন্দনাইশ ও সাতকানিয়া আংশিক): চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ও চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা বিষয়ক সম্পাদক ডা. মহসিন জিল্লুর করিম এবং ২০০৮ সালের বিএনপির প্রার্থী ও দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি এডভোকেট মিজানুল হক চৌধুরী,চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি শফিকুল ইসলাম রাহী।
 
চট্টগ্রাম-১৫ (সাতকানিয়া ও লোহাগাড়া): এ আসনে দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক শেখ মো. মহিউদ্দিন, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার ওসমান চৌধুরী, সাতকানিয়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক জামাল হোসেন, উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান চেয়ারম্যান এবং লোহাগাড়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক নাজমুল মোস্তফা আমিন।
 
চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী): সাবেক মন্ত্রী জাফরুল ইসলাম চৌধুরীর পুত্র দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মিশকাতুল ইসলাম চৌধুরী পাপ্পা, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম চৌধুরী আলমগীর, দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক লিয়াকত আলী চেয়ারম্যান এবং দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ও বাঁশখালী পৌরসভার সাবেক মেয়র কামরুল ইসলাম হোসাইনী।

দক্ষিণ চট্টগ্রামের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এখন মনোনয়ন একটি গন্তব্য নয়, বরং একটি যাত্রার শুরু। প্রত্যেক প্রার্থী দলের কেন্দ্রে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে মরিয়া, নিজের শক্তি ও জনপ্রিয়তা প্রমাণের জন্য ছুটছেন মাঠে।

এই প্রস্তুতি ও প্রতিযোগিতার মাঝেই ভবিষ্যতের নেতৃত্বের ছোঁয়া পাওয়া যাচ্ছে, যা আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য ইতিবাচক সংকেত বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

আশা করা যাচ্ছে, কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব যখন আনুষ্ঠানিক মনোনয়ন ঘোষণা করবেন, তখন দক্ষিণ চট্টগ্রামের এই রাজনৈতিক উত্তাপ ও গণসংযোগ আরও তীব্র হবে। এ লড়াই শুধু একজন প্রার্থীর নয়, বরং দল ও এলাকার ভবিষ্যত নির্মাণের লড়াই।