
অভি পাল:চিকিৎসা নিতে গেলে আজকাল শুধু রোগী নয়, পকেটেরও পরীক্ষা দিতে হয়। ভিজিট ফি ১০০০ থেকে ২০০০ টাকা পর্যন্ত। ডাক্তাররা চোখে চোখ রেখে রোগীকে মাত্র দুই মিনিট দেখেন, সঙ্গে অপ্রয়োজনীয় পরীক্ষা prescribe করেন। সেই পরীক্ষার জন্য টাকা দিতে না পারলে ওষুধও মেলে না। টেস্টের অধিকাংশই অপ্রয়োজনীয়, শুধু ডাক্তারদের কমিশন বাড়ানোর জন্য। সরকারি হাসপাতালের দীর্ঘ লাইন থেকে পরিত্রাণ পেতে মানুষ বাধ্য হয়ে বেসরকারি ক্লিনিকে আসে, কিন্তু সেখানে লুটপাটের নতুন ফাঁদ অপেক্ষা করছে। এই লুটপাট থেকে সাধারণ মানুষ রক্ষা পাবে কবে?
রোগীর অসহায়ত্ব কাজে লাগিয়ে ডাক্তাররা অপ্রয়োজনীয় পরীক্ষার মাধ্যমে হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। একাধিক রোগীর অভিযোগ, কোনো প্রয়োজন ছাড়া টেস্টের নাম তালিকায় যুক্ত করা হয়। কেউ প্রতিবাদ করলে, চিকিৎসকের পক্ষ থেকে উত্তর আসে, “টেস্ট না করলে চিকিৎসা সম্ভব নয়।” এর পেছনে রয়েছে কমিশনের লোভ, যেখানে প্রতিটি টেস্ট থেকে ডাক্তাররা পাচ্ছেন বিশাল ভাগ।
সরকারি হাসপাতালের দীর্ঘ লাইন ও অব্যবস্থাপনার কারণে মানুষ বেসরকারি ক্লিনিকে চিকিৎসার জন্য যাচ্ছে। কিন্তু সেখানে চিকিৎসা নয়, চলছে লুটের বাণিজ্য। ভিজিট ফি ও টেস্টের বিল মিলিয়ে অনেক সময় রোগীর সামর্থ্যের বাইরে চলে যায় খরচ। গরিব ও মধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষদের জন্য এই খরচে চিকিৎসা নেওয়া প্রায় অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে রোগীরা তাদের দুর্দশার কথা জানিয়েও কোনো কার্যকর ব্যবস্থা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ সাধারণ জনতার। সাধারণ মানুষ প্রশ্ন করছে, “চিকিৎসা কি আর সেবা নয়? কবে শেষ হবে এই লুটপাট?”
অনেকের কাছে চিকিৎসা এখন এক ধরনের সেবা নয়, বরং একটি ব্যবসা মাত্র। চিকিৎসকদের দৃষ্টি রোগী নয়, শুধুই টাকা আয়। চিকিৎসা খরচ বেড়ে যাওয়ায় নিম্ন আয়ের মানুষ মারাত্মক অর্থনৈতিক সংকটে পড়ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই অবস্থা চলতে থাকলে দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ক্রান্তিকালে পড়বে।
সাধারণ জনগণ বলেন,আজকের চিকিৎসা ব্যবস্থায় রোগীর প্রতি মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি হারিয়ে ফেলেছে। অতিরিক্ত ভিজিট ফি ও অপ্রয়োজনীয় পরীক্ষার নামে অর্থ আদায় বন্ধ করতে হবে। তাই আমরা দাবি করছি—প্রতিটি রোগীর জন্য একটি ন্যূনতম, নির্দিষ্ট ফ্রি ভিজিট ও সেবা নিশ্চিত করতে হবে, যেন অর্থের অভাবে কেউ চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত না হয়। সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবিলম্বে এই ফ্রি চিকিৎসা ব্যবস্থা চালু করে রোগীর অধিকার রক্ষা এবং স্বাস্থ্যসেবার মান উন্নয়নে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।