চট্টগ্রাম-টরন্টো সংযোগের নতুন অধ্যায়: ড. শাহাদাতের কূটনৈতিক ছোঁয়া

আমাদের দিগন্ত প্রতিবেদক: চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ড. শাহাদাত হোসেন সম্প্রতি কানাডার টরন্টো শহরে কানাডার ফেডারেল সংসদ সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী নাথানিয়েল এরস্কাইন-স্মিথের সঙ্গে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে মিলিত হন। এই বৈঠকে দুই শহরের মধ্যে অর্থনৈতিক, সামাজিক ও পরিবেশগত সহযোগিতার নানামুখী সম্ভাবনা নিয়ে গভীর আলোচনা হয়, যা বাংলাদেশ ও কানাডার মধ্যকার বন্ধন আরও সুদৃঢ় করার সম্ভাবনা তৈরি করেছে।

আলোচনায় উঠে আসে চট্টগ্রাম বন্দর ও কানাডার প্রধান বন্দরগুলোর মধ্যে সরাসরি বাণিজ্য রুট স্থাপন, কাস্টমস প্রক্রিয়া সহজীকরণ এবং দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সম্প্রসারণের সম্ভাবনা। প্রবাসী বাংলাদেশিদের অংশগ্রহণে নতুন বিনিয়োগের পথ উন্মোচন এবং দক্ষ জনশক্তি রপ্তানি ও শিক্ষার্থী বিনিময়ের মাধ্যমে অভিবাসন ব্যবস্থাকে আরও সুসংগঠিত করার বিষয়ে উভয়পক্ষ আগ্রহ প্রকাশ করে।

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় যৌথ প্রকল্প গ্রহণের কথাও আলোচনায় স্থান পায়। বিশেষ করে বন্যা ব্যবস্থাপনা, জলবায়ু অভিযোজন, সবুজ অবকাঠামো ও টেকসই নগর উন্নয়নে একসঙ্গে কাজ করার বিষয়টি গুরুত্ব পায়। পাশাপাশি আধুনিক শহর গঠনে সাশ্রয়ী আবাসনের পরিকল্পনা এবং নগর অবকাঠামো উন্নয়নে কানাডার অভিজ্ঞতা বিনিময়ের ওপর জোর দেওয়া হয়।

মানবিক সহায়তা ও আন্তর্জাতিক উন্নয়নের খাতেও দুই দেশের পারস্পরিক সহযোগিতা বাড়ানোর আলোচনা হয়। রোহিঙ্গা সংকটে বাংলাদেশের ভূমিকা এবং এ ইস্যুতে কানাডার সহায়তা অব্যাহত রাখার বিষয়ে নাথানিয়েল এরস্কাইন-স্মিথ আশ্বাস দেন। স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় ভবিষ্যতে যৌথ উদ্যোগ নেওয়ার আগ্রহ ব্যক্ত করা হয়।

এছাড়াও, সমুদ্রবন্দর আধুনিকায়ন, লজিস্টিকস, সবুজ প্রযুক্তি এবং গবেষণা ও উদ্ভাবনের ক্ষেত্রেও দুই পক্ষ একসঙ্গে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করে। কোভিড-১৯ মহামারী থেকে প্রাপ্ত শিক্ষা এবং জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নয়নে অভিজ্ঞতা বিনিময়ের বিষয়েও আলোচনা হয়।

বৈঠক শেষে মেয়র ড. শাহাদাত হোসেন বলেন, “নাথানিয়েল এরস্কাইন-স্মিথের মতো একজন অভিজ্ঞ ও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ফেডারেল নেতার সঙ্গে আলোচনা অত্যন্ত ফলপ্রসূ হয়েছে।” তিনি আশা প্রকাশ করেন, এই বৈঠক চট্টগ্রাম ও টরন্টোর মধ্যে একটি নতুন বন্ধনের সূচনা করবে।

নাথানিয়েল এরস্কাইন-স্মিথও দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও মানবিক সহযোগিতা আরও জোরদার করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। অংশগ্রহণকারীরা আশা প্রকাশ করেন, এই বৈঠক চট্টগ্রাম ও টরন্টোর সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে।